Posted by B.K
ভ্রমন ২৪:বান্দরবান জেলার পর্যটন অঞ্চল/দর্শনীয় স্থান সমূহ :
ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি এবং
কক্সবাজার থেকে বান্দরবান বাস
যোগাযোগ রয়েছে। বান্দরবান শহর
থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে
বালাঘাটায় রয়েছে বাংলাদেশের
সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ মন্দির। এটি
সম্পূর্ণরূপে দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার
মন্দিরগুলোর অনুকরণে তৈরি করা
হয়েছে এবং বাংলাদেশের দ্বিতীয়
বৃহত্তম বৌদ্ধ মুর্তিটি এখানে রয়েছে।
স্থানীয়ভাবে এটি হলো "বুদ্ধ ধাতু
জাদি"। এছাড়া শহরের মধ্যেই রয়েছে
জাদিপাড়ার রাজবিহার এবং
উজানীপাড়ার বিহার। শহর থেকে
চিম্বুকের পথে যেতে পড়বে বম ও ম্রো
উপজাতীয়দের গ্রাম। প্রান্তিক হ্রদ,
জীবননগর এবং কিয়াচলং হ্রদ আরও
কয়েকটি উল্লেখ্য পর্যটন স্থান। রয়েছে
মেঘলা সাফারী পার্ক, যেখানে
রয়েছে দুটি সম্পূর্ণ ঝুলন্ত সেতু। সাঙ্গু
নদীতে নৌকা ভ্রমণ, ভ্রমণ
পিয়াসীদের জন্য হতে পারে একটি
মনোহর অভিজ্ঞতা। বান্দরবান শহর
থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত
শৈল প্রপাত একটি আকর্ষণীয় পাহাড়ি
ঝর্ণা।
এছাড়া বাংলাদেশের উচ্চতম
পর্বতশৃঙ্গ তাজিংডং এবং বৃহত্তম
পর্বতশৃঙ্গ কেওক্রাডং এই বান্দরবান
জেলাতেই অবস্থিত। মৌসুমগুলোতে এই
দুটি পর্বতশৃঙ্গে আরোহন করার জন্য
পর্যটকদের ভীড় জমে উঠে। পর্যটকরা
সাধারণত বগা লেক থেকে হেঁটে
কেওক্রাডং এ যান। অনেকেই আছেন
যারা কেওক্রাডং না গিয়ে বগা লেক
থেকে ফিরে আসেন। এই হ্রদটিও
বিশেষ দর্শনীয় স্থান। হ্রদসন্নিহিত
এলাকায় বম উপজাতিদের বাস। এছাড়া
অন্যান্য আকর্ষণের মধ্যে আছে:
চিম্বুক পাহাড়
পুরো বান্দারবান জেলাই প্রাকৃতিক
দৃশ্যে ভরপুর।বান্দরবান থেকে পুরো
রাস্তা আকাবাঁকা উচুনিচু। চিম্বুকে
যাওয়ার পথের পাশে রয়েছে অসংখ্য
উপজাতির আবাসস্থল। ঘরগুলো মাচার
মতো উঁচু করে তৈরি। চিম্বুকের চূড়া
থেকে যেদিকে তাকাবেন সেদিকেই
শুধু পাহাড় আর পাহাড়। সবুজ-শ্যামল
পাহাড়ের দৃশ্য চোখ জুড়ানোর অবস্থা।
পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে প্রবাহমান
সাংগু নদী যা আপনাকে নিয়ে যাবে
অনেক দূরে। স্থানীয় উপজাতীদের
সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়,
চিম্বুকের চূড়ায় দাঁড়িয়ে অনেক সময়
মেঘও ধরা যায়।
ঢাকা থেকে বাস/ট্রেন/বিমানযোগে
চট্রগ্রাম এসে সেখান থেকে বাসে
বান্দরবান যাওয়া যায়। বান্দারবান
থেকে চিম্বুকে যেতে হবে জিপ
গাড়িতে। যাকে স্থানীয়ভাবে বলা হয়
চান্দের গাড়ি। চান্দের গাড়িতে
গেলে নামতে হবে বুলি বাজারে।
ভাড়া করা জিপ নিয়ে সরাসরি চূড়ায়
যাওয়া যায়। নিজস্ব জিপ নিয়েও
যাওয়া যায়। বান্দরবান জেলা সদর
থেকে ৩৬৪ টি ছোট-বড় মোড় অতিক্রম
করে ২৬ কিঃমিঃ দূরে চিম্বুকে যেতে
হবে।
বান্দারবানে থাকার জন্য রয়েছে
নানা রকম আবাসিক হোটেল। এছাড়া
সরকারী রেস্টহাউসসহ জেলা পরিষদ,
সড়ক ও জনপথ, বন বিভাগ, এলজিইডি ও
পার্বত্য জেলা পরিষদের রেস্টহাউসও
রয়েছে। এছাড়াও বান্দরবান জেলা
থেকে ৪.২ কিঃমিঃ দূরে চিম্বুক
সড়কের মিলনছড়িতে রয়েছে দি গাইড
টু্রস লিঃ এর হিল সাইড রিসোর্ট।
এখানে থাকার জন্য রয়েছে বেশ
কয়েকটি মনোরম কটেজ ঘর ও ডরমিটরি।
কটেজগুলোর একক ভাড়া ৭৫০ টাকা
দুজন ১০০০ টাকা। পুরো কটেজ ভাড়া
নেওয়া যায়। বোম ঘরের ভাড়া একক
৪৫০ টাকা, দুজন ৭০০ টাকা, মারমা
ঘরের ভাড়া জনপ্রতি ২০০ টাকা,
দুজনের ৪০০ টাকা, ডরমিটরির ভাড়া
প্রতি বেড ১৫০ টাকা । বেশি বেড
নিলে ভাড়া কম।
নীলগিরি
Image
নীলগিরি : বান্দরবান জেলা সদর
থেকে প্রায় ৪৭ কিলোইমটার দক্ষিণ
পূর্ব দিকে বান্দরবান-থানছি সড়কে
পাহাড় চূড়ায় নীলগিরি পর্যটন কেন্দ
অবস্থিত। যে কোনো গাড়িতে চড়ে
সরাসরি নীলগিরিতে যাওয়া যায়।
সমুদ্র পৃষ্ঠ হতে এর উচ্চতা ২ হাজার ২
শত ফুট। একানকার প্রকৃতির কারুকাজ
সবাইকে মুগ্ণ করে । এই রোদ, এই বৃষ্টি,
আকাশে মেঘের গর্জন সেই সাথে
রংধনুর হাসিমাখা আলোএক রুশ্মি,
বাতাসের সাথে ছন্দ আর তাল মিলিয়ে
প্রকৃতির বৈবিত্র্যময় এই পরিবর্তনের
এই পরিবর্তনের দৃশ্যগুলো পর্যটকদের
আকৃষ্ট করে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৭
ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাকশন ব্যাটালিয়ন
কর্তৃক চিম্বুক-থানচি সড়কটি
নির্মাণের সময় ম্রো জনগোষ্ঠী
অধ্যুষিত বান্দরবান থানিছ সড়কের
কাপ্রু পাড়া এলাকায় প্রথমে
নিরাপত্তা চৌকি হিসেবে এটি
নিমিত হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ
সেনাবাহিনীর উচ্চ পদস্থ
কর্মকর্তাএদর পরিকল্পনায় এটি একটি
পর্যটন কেন্দ্রের পূর্ণতা লাভ করে।
এখানে মেঘদূত, আকাশনীলা,
নীলাঙ্গনা, মারমা হাউজসহ নানা
নামের আকর্ষীয় কটেজ রয়েছে। আছে
একটি ক্যাফেটেরিয়া। বর্তমানে
দেশি বিদেশি পর্যটকরা প্রতিদিনই
নীলগিরি ভ্রমণে আসছেন।
দিনের বেলায় এই স্থান থেকে খালি
চোখে বঙ্গোপসাগর ও জাহাজ
চলাচলের দৃশ্য দেখা যায়। এছাড়া
ছোট ছোট পাহাড়ের কোল ঘেয়ে
বয়ে যাওয়া সাঙ্গু নদীর আকাবাকা
দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য সকলকে আকর্ষণ রে।
আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত এই
নীলিগিরি রিসোর্টে অবস্থান ও
রাত্রিযাপনের জন্য সেনাবাহিনীর
বান্দরবান ব্রিগেড হেডকোয়াটার এর
সাথে আগাম যোগাযোগ করতে হয়।
প্রকৃতির অপরুপ মনমুগ্ধকর নয়নাভিরাম
এই দৃশ্যগুলি পর্যটকদের স্মৃতিতে ধরে
রাখার জন্য রয়েছে বিভিন্ন স্পট।